পোস্ট কনটেন্ট

ক্র্যাক অ্যাপস কি?
ক্র্যাক বা মোড অ্যাপস কিংবা পাইরেটেড অ্যাপস যাই বলি না কেন, এর অর্থ হল পরিবর্তন করা কিংবা বিনা অনুমতিতে গ্রহণ করা। সহজ ভাষায় এটা একধরনের পদ্ধতি যার মাধ্যমে মূল সফটওয়্যার পরিবর্তন করে হুবহু নকল করে ব্যবহার করা। মূল সফটওয়্যার এর বিভিন্ন লিমিটেশন বাইপাস করে বা ফোর্স করে সফটওয়্যার এর অভ্যন্তরীণ কোডগুলো পরিবর্তন করে বিশেষ সুবিধা নেওয়া। যা একটি অপরাধ, কারণ একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার কখনোই চাইবে না, তার তৈরি করা একটি জিনিস আপনি না কিনে বা অনুমতি না নিয়ে, সেটার পরিবর্তন করে ব্যবহার করা। এটাই ত স্বাভাবিক, আপনি কি দিবেন আপনার তিল তিল করে গড়ে তোলা একটা সম্পদ, অন্য কাউকে অবৈধভাবে পরিবর্তন করে ব্যবহার করতে? আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
“আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের মাল গ্রাস করো না এবং জানা সত্ত্বেও অসৎ উপায়ে লোকের মাল গ্রাস করার উদ্দেশে তা বিচারকের নিকট নিয়ে যেও না।” ~সূরা বাকারা ২:১৮৮
অজান্তেই অনেকে এই পাপচারে লিপ্ত হচ্ছে। হয়তোবা জেনে বা না জেনেই। এই ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহারে, আমরা হালাল-হারাম, বৈধ-অবৈধের কোনো তোয়াক্কাই করছিনা। যেগুলোর প্রভাব আমাদের বাস্তব জীবনেও পড়ছে। শয়তান এভাবেই আমাদের ঘায়েল করছে। আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘনকারী ও হারাম অবলম্বনকারীদেরকে আল্লাহ তা’আলা ভীতিপ্রদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন,
“যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশের অবাধ্যতা করে এবং তাঁর সীমারেখাসমূহ লংঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরস্থায়ী হবে। আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি”। ~সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৪
আমরা সাধারণত এই অ্যাপ/ সফটওয়্যারগুলো কোথায় দেখতে পাই?
সর্বক্ষেত্রে এখন এই ধরনের অ্যাপস ব্যবহারের ছড়াছড়ি। আপনি যখন ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কিনে আনবেন তখন হার্ডডিস্কে একগাদা ক্র্যাক বা পাইরেটেড সফটওয়্যার ইন্সটল করে দেয় দোকান থেকে। সেইখান থেকেই অনেকের ক্র্যাক অ্যাপস ব্যবহারে শুরু। আবার অনেকে ব্যক্তিগতভাবে এসকল সফটওয়্যার ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে থাকেন। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট সেক্টরে কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবহারে নির্ধিধায় এসকল অ্যাপস ব্যবহার হচ্ছে। অনেকের জীবিকার মাধ্যম হচ্ছে এই সফটওয়্যারগুলো। গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ফটো-ভিডিও এডিটিং, ফ্রিলান্সিংসহ বড় বড় প্রজেক্টের কাজ হচ্ছে এসকল সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এসব ব্যবহার কতটুকু বৈধ হচ্ছে একবার চিন্তা করুন। হাজার হাজার, লাখ লাখ কম্পিউটার, ল্যাপটপে ব্যবহার হচ্ছে। এসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে উপার্জিত অর্থইবা কতটুকু হালাল হচ্ছে। মহান আল্লাহ তা’আলাই ভালো জানেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,"হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দু’য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়- যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে।" ~সহীহ বুখারী ৫২ (তাওহীদ পাবলিকেশন)
যতই আমরা হারাম থেকে হালালের পথে আগাবো ততই আমাদের ঈমান মজবুত হবে। আল্লাহ তা'আলা বিকল্প ব্যবস্থা অবশ্যই করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
অ্যাপস/সফটওয়্যারগুলো কি আসলেও কিনে ব্যবহার করা যায়না? কোম্পানিগুলো নজরদারি দিচ্ছেনা বলেই কি পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত?
ফিতনার এই যুগে, ক্র্যাক অ্যাপস ব্যবহারে মত একটা পাপাচারে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছি, উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বেশি। অনেকেই এর সপক্ষে যুক্তি দেয় যে, বাংলাদেশের মত দেশে এসকল অ্যাপস সহজ উপায়ে কেনার উপায় না থাকা, অতিরিক্ত মূল্য, মাসিক/বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন দিয়ে কেনা অনেক ঝামেলার ব্যাপার, এছাড়া স্টুডেন্ট হওয়ায় পর্যাপ্ত টাকা হাতে না থাকায় অনেকেই এসকল অ্যাপস প্রয়োজনের তাগিদে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, টাকা বা ডলার দিয়ে এমন কোনো সফটওয়্যার নেই যে বাংলাদেশে থেকে এখন কেনা যায় না। সকল ধরনের জনপ্রিয় এপসগুলো আপনি দেশ থেকেই টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন (যদি আপনার কেনার ইচ্ছাটা থাকে)। যেমনটি আপনি ক্র্যাক এপসগুলো বিভিন্ন সাইট ঘেটে ডাউনলোড করেন, ইন্সটলেশনও করেন অনেক ঝক্কিঝামেলা নিয়েই। তেমনটি আপনি চাইলে এগুলো কেনার পদ্ধতিও পেয়ে যাবেন একটু ঘাটাঘাটি করলেই। অথবা যে বা যারা কিনে ব্যবহার করছেন তার কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পেইড এপসের বিকল্প কিছু ফ্রি অ্যাপস
বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি অ্যাপস/ সফটওয়্যারগুলো হলঃ- Office Apps (LibreOffice, WPS Office)
- Photo Editor (PhotoscapeX Pro, Krita, GIMP, Inkscape)
- Video Editor (Davinci Resolve, Capcut, Shotcut)
- Video Converter (HandBrake)
- Audio Editor (AudaCity)
- PDF Editor (PDF Creator)
- Screenshot Taking (Lightshot)
- Screen Recorder (OBS Studio)
- Note/Text Editor (NotePad++)
- Document Extract (7Zip)
- Internet Download Manager (Internet Download Accelerator)
- GIS Apps (QGIS)
- AutoCad (LibreCad)
ক্র্যাক/মোড/পাইরেড অ্যাপস ব্যবহারে আপনি মারাত্মক ক্ষতির মধ্যেও পড়তে পারেন
ক্র্যাক এপসগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ভাইরাস ও ম্যালওয়ার জুড়ে দেয় হ্যাকাররা। কারণ এসকল এপসের চাহিদা ও ব্যবহারকারী অনেক বেশি। তারা সহজেই কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং মোটা অংকের টাকাও দাবি করে। এছাড়া একজন মুসলিম হিসেবে পার্থিব জীবন শেষে আল্লাহর কাছে প্রত্যেককে নিজ নিজ কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। মহান আল্লাহ তা'আলা বলেনআর যে স্বীয় রবের সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজকে বিরত রাখে। ~সূরা নাজিআত ৭৯:৪০
আসসালামু আলাইকুম। আমি আপনার এই পোস্ট দেখে খুবই খুশি হয়েছি। আজকাল তো কেউ এই ব্যাপারে কথাই বলে না। তবে আমি আপনার এই পোস্টের একটি পয়েন্টের ব্যাপারে কথা বলতে চাই।
ReplyDeleteMicrosoft Office সম্ভবত এখন আর পেইড নেই। কারণ আমি কিছুদিন আগেই Microsoft Office 2021 অফিসিয়ালি ডাউনলোড করেছি। তার পদ্ধতি আমি নিচে বর্ননা করছি:
1. Go to https://www.microsoft.com/en-us/download/details.aspx?id=49117
2. Select Language and click download
3. Then the download should be started automatically.
4. To know the next steps, you can watch this tutorial: https://www.youtube.com/watch?v=ulnaN6fBtM8