পোস্ট কনটেন্ট
মুফতি আফজাল হুসেন ইলিয়াস সাহেব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার একজন সিনিয়র আলিম যিনি আমাদের দ্বীনের উন্নতি, সুরক্ষা এবং অগ্রগতির জন্য অসংখ্য উপায়ে বিশাল অবদান রেখেছিলেন। মুফতি আফজাল হুসেন ইলিয়াস সাহেব রাহমাতুল্লাহি আলাইহির "Madrasah in Just 5 Minutes (360 Short Lessons in 10 Categories)" নামে সম্পাদিত বইটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে "৫ মিনিটের মাদ্রাসা " নামের সিরিজটি ধারাবাহিক রাখতে চাচ্ছি ইনশা আল্লাহ্। বইটিতে প্রতিদিনের জন্য পাঁচ মিনিটের শিক্ষামূলক পাঠ সংকলন করা হয়েছে। এই পাঠগুলি ১০টি বিভাগে বিভক্ত। যেমন;
০১. ইসলামিক ইতিহাস
০২. রাসূল ﷺ এর মুজিযা
০৩. একটি ফরয
০৪. একটি সুন্নাত
০৫. একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল এবং এর ফযীলত
০৬. একটি পাপ/গুনাহ
০৭. এই দুনিয়া সম্পর্কে
০৮. আখিরাত সম্পর্কে
০৯. কুরআন ও সুন্নাত থেকে রোগ নিরাময়/চিকিৎসা
১০. কুরআনের উপদেশ/ রসূলুল্লাহ ﷺ এর নসীহত।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা চাইলে আকর্ষণীয় এবং শিক্ষণীয় এই কাজ থেকে সবাই উপকৃত হবে আশা রাখছি।
আজ ৬ শা'বান, ১৪৪৪ হিজরি
১০টি বিভাগে সাজানো ধারাবাহিক এই সিরিজে আজকের পাঠের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা হলঃ
১. ইসলামিক ইতিহাস
মারইয়াম পুত্র ‘ঈসা (আঃ)-এর অবতরণ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, শীঘ্রই তোমাদের মধ্যে মারিয়ামের পুত্র ‘ঈসা (আঃ) শাসক ও ন্যায় বিচারক হিসেবে আগমন করবেন। তিনি ‘ক্রুশ’ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং তিনি যুদ্ধের সমাপ্তি টানবেন। তখন সম্পদের ঢেউ বয়ে চলবে। এমনকি কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না। তখন আল্লাহকে একটি সিজ্দা করা তামাম দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত সম্পদ হতে অধিক মূল্যবান বলে গণ্য হবে....
📖 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী ৩৪৪৮
২. রাসূল ﷺ এর মুজিযা
আ’রাজ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা বলছ যে, আবূ হুরাইরাহ্ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অধিক হাদীস রিওয়ায়াত করছে। আর আল্লাহই হিসাব গ্রহণকারী। আমি ছিলাম একজন নিরীহ লোক। আমি সর্বদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেবায় থাকতাম (খেয়ে না খেয়ে তার সাহচর্যে থাকতাম)। তখন মুহাজিরগণ বাজারে ব্যবসায়-বাণিজ্যে মনোনিবেশ করতেন এবং আনসারগণ তাদের ধনসম্পদের সংরক্ষণ ও হিফাযাতে ব্যতিব্যস্ত থাকতেন। একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে লোক তার বস্ত্রের আঁচল বিছিয়ে দিবে সে আমার নিকট হতে যা কিছু শুনবে তা ভুলবে না। আমি আমার কাপড়ের আঁচল বিছিয়ে দিলাম এবং তিনি হাদীস রিওয়ায়াত করলেন। তারপর আমি সে বস্ত্রটা আমার বুকের সাথে মিলিয়ে নিলাম। তখন হতে আমি তার কাছ থেকে যা কিছু শুনেছি তার কিছুই ভুলে যাইনি।
📖 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম ৬২৯১ (হাদীস একাডেমী)
৩. একটি ফরয
আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা
৪. একটি সুন্নাত
ডান হাত গালের নীচে রেখে শয়ন করা
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী হাফসাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শয়ন করতেন তখন তার ডান হাত গালের নীচে রেখে তিনবার বলতেনঃ ’’আল্লাহুম্মা কিন্নী আযাবাকা ইয়াওমা তাব’আসু ইবাদাকা’’ (অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি যেদিন আপনার বান্দাদেরকে কবর থেকে উঠাবেন, সেদিন আমাকে আপনার আযাব থেকে রক্ষা করুন)।
📖 রেফারেন্স: সুনান আবূ দাউদ ৫০৪৫ (তাহকিককৃত)
৫. একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল এবং এর ফযীলত
সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি বাক্য এমন যে, মুখে তার উচ্চারন অতি সহজ কিন্তু পাল্লায় অনেক ভারী, আর আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। তা হলঃ সুবাহানআল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবাহানআল্লাহিল আযীম।
📖 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী ৬৪০৬
৬. একটি পাপ/গুনাহ
সুদ খাওয়া
৭. এই দুনিয়া সম্পর্কে
দুনিয়ার জীবনের উপমা
আর আপনি তাদের জন্য পেশ করুন দুনিয়ার জীবনের উপমা তা পানির মত, যা আমি আসমান থেকে বর্ষণ করেছি। অতঃপর তার সাথে মিশ্রিত হয় যমীনের উদ্ভিদ। ফলে তা পরিণত হয় এমন শুকনো গুঁড়ায়, বাতাস যাকে উড়িয়ে নেয়। আর আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের শোভা। আর স্থায়ী সৎকাজ তোমার রবের নিকট প্রতিদানে উত্তম এবং প্রত্যাশাতেও উত্তম।
📖 রেফারেন্স: সূরা আল-কাহফ। আয়াত ৪৫-৪৬
৮. আখিরাত সম্পর্কে
হাশরবাসীরা তাদের কৃতকর্মকে উপস্থিত পাবে
স্মরণ কর সেদিনের কথা যেদিন আমি পর্বতকে করব সঞ্চালিত এবং তুমি পৃথিবীকে দেখবে একটি শূন্য প্রান্তর; সেদিন মানুষকে আমি একত্রিত করব এবং তাদের কেহকেও অব্যাহতি দিব না। আর তাদেরকে তোমার রবের সামনে উপস্থিত করা হবে কাতারবদ্ধ করে। (আল্লাহ বলবেন) ‘তোমরা আমার কাছে এসেছ তেমনভাবে, যেমন আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম; বরং তোমরা তো ভেবেছিলে আমি তোমাদের জন্য কোন প্রতিশ্রুত মুহূর্ত রাখিনি’। আর আমলনামা রাখা হবে। তখন তুমি অপরাধীদেরকে দেখতে পাবে ভীত, তাতে যা রয়েছে তার কারণে। আর তারা বলবে, ‘হায় ধ্বংস আমাদের! কী হল এ কিতাবের! তা ছোট-বড় কিছুই ছাড়ে না, শুধু সংরক্ষণ করে’ এবং তারা যা করেছে, তা হাযির পাবে। আর তোমার রব কারো প্রতি যুলম করেন না।
📖 রেফারেন্স: সূরা আল-কাহফ। আয়াত ৪৭-৪৯
৯. কুরআন ও সুন্নাত থেকে রোগ নিরাময়/চিকিৎসা
মোটা হওয়া সম্পর্কে
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গৃহে পাঠানোর উদ্ধেশ্যে, তাড়াতাড়ি মোটা করে তোলার ইচ্ছা করেন। এ জন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। পরে তিনি আমাকে তাজা খাজুরের সাথে শশা খাওয়াতে থাকলে আমি দ্রুত হৃষ্ট-পুষ্ট হয়ে উঠি।
📖 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী ৩৪৪৮
১০. কুরআনের উপদেশ
وَ اصۡبِرۡ نَفۡسَکَ مَعَ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ رَبَّهُمۡ بِالۡغَدٰوۃِ وَ الۡعَشِیِّ یُرِیۡدُوۡنَ وَجۡهَهٗ وَ لَا تَعۡدُ عَیۡنٰکَ عَنۡهُمۡ ۚ تُرِیۡدُ زِیۡنَۃَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ لَا تُطِعۡ مَنۡ اَغۡفَلۡنَا قَلۡبَهٗ عَنۡ ذِکۡرِنَا وَ اتَّبَعَ هَوٰىهُ وَ کَانَ اَمۡرُهٗ فُرُطًا ﴿۲۸﴾
আর তুমি নিজকে ধৈর্যশীল রাখ তাদের সাথে, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের রবকে ডাকে, তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশে, এবং দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তোমার দু’চোখ যেন তাদের থেকে ঘুরে না যায়। আর ওই ব্যক্তির আনুগত্য করো না, যার অন্তরকে আমি আমার যিকির থেকে গাফেল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে এবং যার কর্ম বিনষ্ট হয়েছে।
📖 রেফারেন্স: সূরা আল-কাহফ। আয়াত ২৮