দুআ কবুলের শর্ত

বিভাগ: বেসিক ইসলাম

সম্ভাব্য পড়ার সময়: ৩ মিনিট

১.ইখলাস

অর্থাৎ দোয়া ও আমলকে সব ধরনের ত্রুটি থেকে মুক্ত রাখা, পুরোটাই একমাত্র আল্লাহর জন্য হওয়া, তাতে কোনও শির্ক না থাকা, মানুষকে দেখানো বা শোনানোর বিষয় না থাকা, ভঙ্গুর বস্তু না চাওয়া, তাতে কোনও ভণ্ডামি না থাকা, বরং বান্দা (এর মাধ্যমে) আল্লাহর কাছে সাওয়াব প্রত্যাশা করবে, তাঁর শাস্তিকে ভয় পাবে এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠবে।

জেনে রেখ, আল্লাহর জন্যই বিশুদ্ধ ইবাদাত-আনুগত্য। (সূরা যুমার ৩৯:৩)

তাদেরকে এ ছাড়া অন্য কোন হুকুমই দেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে। আর তারা নামায প্রতিষ্ঠা করবে আর যাকাত দিবে। আর এটাই সঠিক সুদৃঢ় দ্বীন। (সূরা বায়্যিনাহ ৯৮:৫)

২. শরীয়াহর আনুগত্য

যদি আমল হয় একনিষ্ঠ, কিন্তু তা সঠিক হলো না, তা হলে তা কবুল হবে না; আবার আমল হলো সঠিক, কিন্তু তা একনিষ্ঠ নয়, সেটিও কবুল হবে; কবুল হওয়ার জন্য তা একনিষ্ঠ ও সঠিক-উভয় মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। একনিষ্ঠ হওয়া মানে বিষয়টি আল্লাহর জন্য হওয়া, আর সঠিক হওয়া মানে সুন্নাহ অনুযায়ী হওয়া।

বল, ‘আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহই এক ইলাহ। সুতরাং যে তার রবের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার রবের ইবাদাতে কাউকে শরীক না করে’। (সূরা কাহফ ১৮:১১০)

৩. আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস

দোয়া কবুলের জন্য অন্যতম বড় শর্ত হলো, আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখা এবং (এ বিশ্বাস জাগরুক রাখা) যে, তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান; কারণ আল্লাহ তা’আলা কোনও কিছুকে বলেন ‘হও!’ আর অমনি তা হয়ে যায়।

তাঁর ব্যাপারতো শুধু এই যে, যখন তিনি কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন বলেন ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায়। (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৮২)

নবি ﷺ বলেছেন, “কোনও মুসলিম যদি আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করে, যার মধ্যে কোনও পাপ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের বিষয় নেই, তা হলে আল্লাহ তাকে তিনটির যে-কোনও একটি অবশ্যই দেবেন: ১. হয় দ্রুত তাকে তার দোয়ার ফল দেওয়া হবে, অথবা ২. এটিকে তার আখিরাতের জন্য জমা রাখা হবে, নতুবা ৩. তার কাছ থেকে অনুরূপ কোনও অনিষ্ট দূর করে দেওয়া হবে।” (এ কথা শুনে) সাহাবিগণ বলেন, “তা হলে আমরা বেশি বেশি দোয়া করব!” নবি ﷺ বলেন, “আল্লাহর দয়া তোমাদের দোয়ার চেয়ে অনেক বেশি!” [আহমাদ, ৩/১৮, ১১১৩৩, ইসনাদটি সহীহ]

হাদীসে কুদসীতে এসেছে,আল্লাহ বলেন,

হে আমার বান্দা! তোমাদের আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সকল মানুষ ও জিন যদি কোন বিশাল মাঠে দাঁড়িয়ে সবাই আমার কাছে আবদার করে আর আমি প্রত্যেক ব্যক্তির চাহিদা পূরণ করি তাহলে আমার কাছে যা আছে তাতে এর চাইতে বেশী হ্রাস পাবে না, যেমন কেউ সমুদ্রে একটি সূচ ডুবিয়ে দিলে যতটুকু তা থেকে হ্রাস পায়। (মুসলিম ৬৪৬৬)

৪. বিনয়ের সাথে দুআ করা

অতঃপর আমি তার আহবানে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া। আর তার জন্য তার স্ত্রীকে উপযোগী করেছিলাম। তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত। আর আমাকে আশা ও ভীতি সহকারে ডাকত। আর তারা ছিল আমার নিকট বিনয়ী। (সূরা আম্বিয়া ২১:৯০)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবূলের দৃঢ় প্রত্যয় রেখে তোমরা আল্লাহর কাছে দু’আ করবে। জেন রাখ, উদাসীন ও আমনোযোগী মনের দু’আ আল্লাহ তা’আলা কবুল করেন না। (তিরমিযী ৩৪৭৯)

৫. দুআয় দৃঢ়তা বজায় রাখা

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দু’আ করলে দু’আর সময় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে দু’আ করবে এবং এ কথা বলবে না হে আল্লাহ! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে কিছু দিন। কারণ আল্লাহকে বাধ্য করার কেউ নেই। (বুখারী ৬৩৩৮)

শেয়ার:
guest

1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments