দুআ অর্থ চাওয়া,প্রার্থনা করা ,ডাকা, ইবাদত করা, বানী, আহ্বান করা, অনুনয় বিনয় করা, প্রশংসা সহকারে ডাকা। পারিভাষিক অর্থ রবের কাছে বান্দার চাওয়া।
দুআ প্রধানত দুই প্রকারঃ
১.ইবাদতরূপী দুআ
যেমন: সালাত,তাসবীহ,তাহমিদ,তাহলীল
২.যাচনারূপী দুআ
কোনো কিছু চাওয়া যা প্রার্থীর উপকারে আসবে অথবা তার কোনো অনিষ্ট দূর করবে;অভাব, অভিযোগ ও অনুযোগ পেশ করা।
দুআ শক্তিশালী উপকরণ, অন্যতম উপকারী ঔষধ; এটি বিপদ-মুসিবতের শত্রু; এটি বিপদ প্রতিরোধ ও উপশম করে, মুসিবত ঠেকিয়ে রাখে ও অপসারণ করে; আর বিপদ-মুসিবত একান্ত এসে গেলে, দোয়া সেটিকে সহজ করে দেয়; দোয়া হলো মুমিনের মোক্ষম হাতিয়ার।
দুআর সঙ্গে বিপদ- মুসিবতের সম্পর্ক তিন ধরনের:
১. দোয়া মুসিবতের চেয়ে অধিক শক্তিশালী, এ ক্ষেত্রে এটি তা প্রতিরোধ করে;
২. যখন দোয়া মুসিবতের চেয়ে দুর্বল হয়, তখন উভয়ের মধ্যে লড়াই হওয়ার পরই কেবল ব্যক্তিকে তা স্পর্শ করে, আর ততক্ষণে মুসিবত অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে;
৩. দুটিই সমান শক্তিশালী, ফলে উভয়ের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে, আর তাতে ব্যক্তি থাকে নিরাপদ।
দুআর গুরুত্ব
১.আল্লাহ আমাদের দুআ করতে উৎসাহিত করেছেন
আর তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহঙ্কার বশতঃ আমার ইবাদাত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’
(সূরা মুমিন ৪০:৬০)
২. আল্লাহ আমাদের ডাকে সাড়া দেন
আর যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।
(সূরা বাকারা ২:১৮৬)
৩. দুআ ইবাদতের মূল
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দু‘আই হলো ‘ইবাদাত।
(জামে’ আত-তিরমিজি ৩৩৭২)
৪. আল্লাহ বান্দার ধারণা অনুযায়ী ফল দেন
আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার সাথে তার ধারণার অনুরূপ আচরণ করি।আর যখন সে আমাকে ডাকে আমি তার ডাকে সাড়া দেই। (সহীহ মুসলিম ২৬৭৫)
৫. দুআ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু’আর চেয়ে কোন জিনিস বেশি সম্মানিত নয়। (জামে’ আত-তিরমিজি ৩৩৭০)
৬. যে দুআ করে না আল্লাহ তার প্রতি নারাজ হোন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলার কাছে যে লোক চায় না, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর নাখোশ হন।
(জামে’ আত-তিরমিজি ৩৩৭৩)
৭. দুআ বিপদ প্রতিরোধক
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যার জন্য দু’আর দরজা খুলে দেয়া হল, মুলত তার জন্য রহমতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হল। আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে যা কিছু কামনা করা হয়, তার মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করা তাঁর নিকট বেশি প্রিয়। যে বিপদ-আপদ এসেছে আর যা (এখনও) আসেনি তাতে দু’আয় কল্যাণ হয়। অতএব হে আল্লাহ্র বান্দাগণ! তোমরা দু’আকে আবশ্যিক করে নাও।
(জামে’ আত-তিরমিজি ৩৫৪৮)
৮. দুআ ভাগ্যের পরিবর্তনকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’আ ব্যতীত অন্য কোন কিছুই ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে না এবং সৎকাজ ব্যতীত অন্য কোন কিছুই হায়াত বাড়াতে পারে না।
(জামে’ আত-তিরমিজি ২১৩৯)
Jajakallah Khairon