জিহ্বা আমাদের শরীরের একটি মূল্যবান অঙ্গ, তাই এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। জিহ্বার গুনাহসমূহ হলো মিথ্যা বলা, গীবত করা, পরনিন্দা করা, গালি দেওয়া, মিথ্যা কসম করা, চোগলখুরি করা ইত্যাদি। কেয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এ ব্যাপারে স্বয়ং সাক্ষ্য দেবে। কারণ আল্লাহ সেগুলোকে প্রশ্ন করবেন। এটা হাশরের ময়দানে গুনাহগারদের জন্য অত্যন্ত লাঞ্ছনার কারণ হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“যেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও তাদের পা তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে।“ [1]
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে (তা লিপিবদ্ধ করার জন্য) তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।[2]
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও আমাদেরকে জিহ্বার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন;
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন কর্মটি সবচাইতে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ভীতি, সদাচার ও উত্তম চরিত্র। আবার তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচাইতে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তিনি বললেনঃ মুখ ও লজ্জাস্থান। [3]
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেনঃ মানুষ সকালে ঘুম হতে উঠার সময় তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিনীতভাবে জিহবাকে বলে, তুমি আমাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর। আমরা তো তোমার সাথে সম্পৃক্ত। তুমি যদি সোজা পথে দৃঢ় থাক তাহলে আমরাও দৃঢ় থাকতে পারি। আর তুমি যদি বাঁকা পথে যাও তাহলে আমরাও বাঁকা পথে যেতে বাধ্য। [4]
অর্থাৎ জিহ্বার ব্যাপারে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করাই অহেতুক গুনাহ এবং বিপর্যয় থেকে বেঁচে থাকার একটি উপায়। এছাড়াও নিয়মিত তওবা করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া আমাদের অভ্যাসে পরিণত করা উচিত। এমন বেশ কিছু জিহ্বার গুনাহসমূহ সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাকঃ
একনজরে...
মিথ্যা কথা বলা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সত্য নেকীর দিকে পরিচালিত করে আর নেকী জান্নাতে পৌঁছায়। আর মানুষ সত্যের উপর কায়িম থেকে অবশেষে সিদ্দীক -এর দরজা লাভ করে। আর মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়, পাপ তাকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা কথা বলতে বলতে অবশেষে আল্লাহ্র কাছে মহামিথ্যাচারী প্রতিপন্ন হয়ে যায়।[5]
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে, সে খালিস মুনাফিক বলে গন্য হবে। যে ব্যক্তি কথা বলার সময় মিথ্যা বলে, আর অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে, প্রতিশ্রুতি দিলে বিশ্বাসঘাতকতা করে, যখন ঝগড়া করে গালাগালি করে। যার মধ্যে এগুলোর কোন একটি স্বভাব পাওয়া যাবে, তার মধ্যে নিফাকের একটি স্বভাব পাওয়া গেল, যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করে।[6]
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মিথ্যা কথা এবং সে অনুসারে কাজ করা আর মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই।[7]
রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষকে হাসানোর জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস।[8]
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কেউ জিজ্ঞেস করল, মু‘মিন সাহসহীন বা ভীরু হতে পারে কি?
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ।
আবার জিজ্ঞেস করা হল, মু‘মিন কৃপণ (বখিল) হতে পারে কি?
তিনি বললেন, হ্যাঁ।
আবার জিজ্ঞেস করা হল, মু‘মিন মিথ্যাবাদী হতে পারে কি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না। [9]
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
সুতরাং মূর্তিপূজার অপবিত্রতা থেকে বিরত থাক এবং মিথ্যা কথা পরিহার কর।[10]
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া
কুরআনে আল্লাহ রহমানের বান্দার একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেন
“আর যারা মিথ্যার সাক্ষ্য হয় না।” [11]
আল্লাহ আরো বলেন,
“আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না এবং যে কেউ তা গোপন করে, অবশ্যই তার অন্তর পাপী। আর তোমরা যা আমল কর, আল্লাহ সে ব্যাপারে সবিশেষ অবহিত।” [12]
আবূ বক্র (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা তিনবার বললেন, আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহগুলো সম্পর্কে অবহিত করব না? সকলে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! অবশ্যই বলুন। তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শির্ক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া। তিনি হেলান দিয়ে বসেছিলেন; এবার সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, শুনে রাখ! মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া, এ কথাটি তিনি বার বার বলতে থাকলেন। এমনকি আমরা বলতে লাগলাম, আর যদি তিনি না বলতেন। [13]
মিথ্যা স্বপ্ন বলা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন,
- যে লোক এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল যা সে দেখেনি তাকে দু’টি যবের দানায় গিট দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে তা কখনও পারবে না
- সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা হল আপন চক্ষু দিয়ে এমন কিছু দেখার (দাবি করা) যা চক্ষুদ্বয় দেখতে পায়নি। [14]
মিথ্যা কসম খাওয়া
মিথ্যা কথা বলা কবিরা গুনাহ। যখন সেটা আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বলা হয় তখন আরো মারাত্মক গুনাহ হয়ে দাড়ায়। সাধারণত মানুষ নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যা কসমের আশ্রয় নেয়। অথচ,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য হবে মর্মন্তুদ শাস্তি।’’এরূপ তিনি তিনবার বললেন।
১.যে (পায়ের) গাঁটের নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে,
২.দান করে যে প্রচার করে বেড়ায় এবং
৩.মিথ্যা কসম খেয়ে নিজের পণ্যদ্রব্য বিক্রি করে।[15]
মিথ্যা গর্ব করা
কোন এক মহিলা বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার সতীন আছে। এখন তাকে রাগানোর জন্য যদি আমার স্বামী আমাকে যা দেয়নি তা বাড়িয়ে বলি, তাকে কি কোন দোষ আছে? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যা তোমাকে দেয়া হয়নি, তা দেয়া হয়েছে বলা ঐরূপ প্রতারকের কাজ, যে প্রতারণার জন্য দুপ্রস্থ মিথ্যার পোশাক পরিধান করল। [16]
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কাউকে কিছু দান করা হলে পরে তার (দান গ্রহীতার) সংগতি হলে সে যেন এর প্রতিদান দেয়। সংগতি না হলে সে যেন তার প্রশংসা করে। কেননা, যে লোক প্রশংসা করল সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। আর যে তা গোপন রাখল সে অকৃতজ্ঞ হলো। যে লোক এমন কিছু পাওয়ার ভান করল যা তাকে দান করা হয়নি, সে যেন ধোঁকাবাজি ও প্রতারণার দুটি পোশাক পরল। [17]
গুজব ছড়ানো
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
হে ঈমানদারগণ, যদি কোন ফাসিক তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোন কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। [18]
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। [19]
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, গত রাতে আমি দেখলাম, দু’জন লোক এসে আমার দু’হাত ধরে আমাকে পবিত্র ভূমির দিকে নিয়ে চললো। হঠাৎ দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া হাতে দাঁড়িয়ে। দাঁড়ানো ব্যক্তি বসে থাকা ব্যক্তির (এক পাশের) চোয়ালটা এমনভাবে আঁকড়া বিদ্ধ করছিল যে, তা (চোয়াল বিদীর্ণ করে) মস্তকের পিছনের দিক পর্যন্ত পৌছে যাচ্ছিল। অত:পর অপর চোয়ালটিও আগের মত বিদীর্ণ করল। ততক্ষণে প্রথম চোয়ালটা জোড়া লেগে যাচ্ছিল। আঁকড়াধারী ব্যক্তি পুণরায় সেরূপ করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কী হচ্ছে? সাথীদ্বয় বললেন, যে ব্যক্তির চোয়াল বিদীর্ণ করার দৃশ্য দেখলেন সে মিথ্যাবাদী; মিথ্যা কথা বলে বেড়াতো, তার বিবৃত মিথ্যা বর্ণনা ক্রমাগত বর্ণিত হয়ে দূর দূরান্তে পৌছে যেতো। ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার সঙ্গে এ ব্যবহার করা হবে। [20]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়। [21]
আল্লাহর নামে মিথ্যা রটনা করা
আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে অথবা তার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে? নিশ্চয়ই যালিমরা সফলকাম হয় না। [22]
আর যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে কিয়ামতের দিন তুমি তাদের চেহারাগুলো কালো দেখতে পাবে। অহঙ্কারীদের বাসস্থান জাহান্নামের মধ্যে নয় কি? [23]
রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামে মিথ্যা বলা
রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে সে যেন জাহান্নামে তাঁর ঠিকানা বানিয়ে নিবে। [24]
ব্যভিচারের অপবাদ দেওয়া
রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আপন দাস দাসীর উপর ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ আনলো, কিয়ামত দিবসে তার উপর এ মিথ্যা অপবাদের শাস্তি আপতিত হবে। কিন্তু সে যা বলেছে তা যদি সত্য হয় তবে নয় (তবে অভিযোগকারী আর শাস্তি পাবে না) [25]
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, সাতটি ধ্বংসকারী বিষয় থেকে তোমরা বিরত থাকবে।
(১) আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা
(২) যাদু
(৩) আল্লাহ্ তা‘আলা যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন, শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করা
(৪) সুদ খাওয়া
(৫) ইয়াতীমের মাল গ্রাস করা
(৬) রণক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং
(৭) সরল স্বভাবা সতী-সাধ্বী মু’মিনাদের অপবাদ দেয়া।[26]
মুসলিমকে গালি দেওয়া
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী(গুনাহের কাজ) এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী।[27]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের পিতা-মাতাকে লা’নত করা। জিজ্ঞেস করা হলো: হে আল্লাহ্র রসূল! আপন পিতা-মাতাকে কোন লোক কীভাবে লা’নত করতে পারে? তিনি বললেনঃ সে অন্যের পিতাকে গালি দেয়, তখন সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তখন সে তার মাকে গালি দেয়। [28]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন অপর জনকে ফাসিক বলে যেন গালি না দেয় এবং একজন অন্যজনকে কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা, অপরজন যদি তা না হয়, তবে সে অপবাদ তার নিজের উপরই আপতিত হবে। [29]
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ বলেন, আদম সন্তানরা আমাকে কষ্ট দেয়। তারা সময়কে গালি দেয়; অথচ আমিই সময়। আমার হাতেই সকল ক্ষমতা; রাত ও দিন আমিই পরিবর্তন করি। [30]
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
- তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। কারণ তা আল্লাহর রহমতের অন্তর্ভুক্ত, তা রহমত ও শাস্তি বয়ে আনে। তোমরা আল্লাহর নিকট এর মধ্যে নিহিত কল্যাণের প্রার্থনা করো এবং তার মধ্যে নিহিত অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো। [31]
- জ্বরকে গালমন্দ করো না। কেননা জ্বর আদম সন্তানের পাপ মোচন করে দেয়, যেভাবে হাপর লোহার মরিচিকা দূরীভূত করে। [32]
- তোমরা মোরগকে গালি দিও না। কারণ সে সালাতের জন্য জাগায়। [33]
- তোমরা মৃতদের গালি দিও না। কারণ, তারা স্বীয় কর্মফল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।[34]
- তোমরা শয়তানকে গালি দিয়ো না; বরং ওর অনিষ্ট হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর। [35]
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আর তোমরা তাদেরকে গালমন্দ করো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত।” [36]
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার উম্মাতের মধ্যে সেই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া যে কিয়ামাত দিবসে নামায, রোযা, যাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সাথে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে, ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এরপর যদি পাওনাদারের হাক তার নেক ’আমল থেকে পূরণ করা না যায় সে ঋণের পরিবর্তে তাদের পাপের একাংশ তার প্রতি নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।[37]
[1] সূরা নূর | আয়াত ২৪
[2] সূরা কাফ | আয়াত ১৮
[3] জামে’ আত-তিরমিজি ২০০৪
[4] জামে’ আত-তিরমিজি ২৪০৭
[5] সহীহ বুখারী ৬০৯৪
[6] বুখারী ৩১৭৮
[7] সহিহ বুখারী, ৬০৫৭
[8] জামে’ আত-তিরমিজি ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ ৪৯৯০
[9] মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ১৮০৩
[10] সূরাঃ আল-হজ্জ | আয়াতঃ ৩০
[11] সূরা ফুরকান | আয়াত ৭২
[12] সূরা বাকারা | আয়াত ২৮৩
[13] সহিহ বুখারী ২৬৫৪
[14] বুখারী ৭০৪২;বুখারী ৭০৪৩
[15] মুসলিম ১৯৫
[16] বুখারী ৫২১৯
[17] জামে’ আত-তিরমিজি, ২০৩৪
[18] সূরাঃ আল-হুজুরাত | আয়াতঃ ৬
[19] সূরা ইসরা; আয়াত ৩৬
[20] বুখারী ১৩৮৬
[21] সহীহ মুসলিম ৫
[22] আল-আন’আম | আয়াতঃ ২১ ; ১৬:১১৬ ২০:৬১ ৬১:৭
[23] সূরা আয-যুমার | আয়াত ৬০; ২৯:৬৮
[24] বুখারী ১০৭
[25] সহীহ মুসলিম ৪২০৩
[26] বুখারী ২৭৬৬
[27] সহীহ বুখারী ৪৮
[28] সহিহ বুখারী ৫৯৭৩
[29] বুখারী ৬০৪৫
[30] সহিহ বুখারী ৪৮২৬
[31] সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৭২৭
[32] সহীহ মুসলিম ৬৪৬৪
[33] সুনান আবূ দাউদ ৫১০১
[34] সহীহ বুখারী ১৩৯৩
[35] সহীহুল জামে ৭৩১৮
[36] সূরা আনআম ৬:১০৮
[37] সহীহ মুসলিম ২৫৮১