hatimanis88

lion4d

hatimanis88

hatimanis88

যেসব কারণে দুআ কবুল হয়না

যেসব কারণে দুআ কবুল হয়না

বিভাগ: বেসিক ইসলাম

সম্ভাব্য পড়ার সময়: ৩ মিনিট

১. হারাম খাবার, পানীয়, পোশাক

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা’আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা’আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।” (সূরা আল মু’মিনূন ২৩:৫১)

তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২:১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু’আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?” (মুসলিম ২২৩৬)

২. দ্রুত ফল না পাওয়ায় দুআ বন্ধ করে দেওয়া

রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বান্দার দু’আ সর্বদা গৃহীত হয় যদি না সে অন্যায় কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য দুআ করে এবং (দুআয়) তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! (দু’আয়) তাড়াহুড়া করা কি? তিনি বললেন, সে বলতে থাকে, আমি দুআ তো করেছি, আমি দুআ তো করেছি; কিন্তু আমি দেখতে পেলাম না যে, তিনি আমার দু’আ কবুল করেছেন। তখন সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, আর দু’আ করা পরিত্যাগ করে। (মুসলিম ৬৮২৯)

৩. অবাধ্যতা ও হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া

পূর্ববর্তী বিদ্বানদের কেউ কেউ বলেছেন, ‘গোনাহের মাধ্যমে রাস্তা বন্ধ করে রেখে, দুআ কবুল হতে দেরি হচ্ছে কেন-এই প্রশ্ন তোলো না!’

নিশ্চয় আল্লাহ কোন কওমের অবস্থা ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। (সূরা রাদ ১৩:১১)

৪. যে কাজ করা আবশ্যক, তা ছেড়ে দেওয়া

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই তোমরা সৎকাজের জন্য আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করবে। তা না হলে আল্লাহ তা’আলা শীঘ্রই তোমাদের উপর তার শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তোমরা তখন তার নিকট দুআ করলেও তিনি তোমাদের সেই দু’আ গ্রহণ করবেন না। (তিরমিযী ২১৬৯)

৫. দুয়ায় ইখলাস না থাকা

মহান আল্লাহর দরবারে ইখলাসের সঙ্গে দোয়া করতে হয়। পরিপূর্ণ ইখলাস না থাকলে সে দোয়া বিফলে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, দোয়াও একটি ইবাদত। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭৯)

৬. দুয়ায় অমনোযোগী থাকা

দোয়ায় মনোযোগ না থাকলেও সে দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কবুল হওয়ার পূর্ণ আস্থা নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো, তোমরা জেনে রাখো যে আল্লাহ নিশ্চয়ই অমনোযোগী ও অসাড় মনের দোয়া কবুল করেন না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৯)

৭.গুনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দুআ

নবি ﷺ বলেছেন, “কোনও মুসলিম যদি আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করে, যার মধ্যে কোনও পাপ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের বিষয় নেই, তা হলে আল্লাহ তাকে তিনটির যে-কোনও একটি অবশ্যই দেবেন: ১. হয় দ্রুত তাকে তার দোয়ার ফল দেওয়া হবে, অথবা ২. এটিকে তার আখিরাতের জন্য জমা রাখা হবে, নতুবা ৩. তার কাছ থেকে অনুরূপ কোনও অনিষ্ট দূর করে দেওয়া হবে।” (এ কথা শুনে) সাহাবিগণ বলেন, “তা হলে আমরা বেশি বেশি দোয়া করব!” নবি ﷺ বলেন, “আল্লাহর দয়া তোমাদের দোয়ার চেয়ে অনেক বেশি!” [আহমাদ, ৩/১৮, ১১১৩৩, ইসনাদটি সহীহ]

৮. আল্লাহ তাআলার প্রজ্ঞা, ফলে তিনি প্রার্থিত বস্তুর চেয়ে অধিক উত্তম কিছু দেন

তাই, বান্দার উচিত দুআয় সাড়া না পেলেও তাড়াহুড়া না করা, কারণ আল্লাহ কয়েকটি কারণে সাড়া দিতে দেরি করেন: হয় (দুআ কবুলের) শর্তাবলি পূরণ হয়নি, অথবা কোনও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, কিংবা এমন কিছু কারণ আছে যা বান্দার জন্য কল্যাণকর, কিন্তু সে তা জানে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।” (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২১৬)

সুতরাং, দুআয় সাড়া না পেলে বান্দার উচিত নিজের অবস্থাকে পুনর্বিবেচনা করা, সকল অবাধ্যতা থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করা এবং ত্বরিত ও বিলম্বিত-যে কোনও কল্যাণে খুশি থাকা।

শেয়ার:

Leave a Comment

hatimanis88

lion4d

hatimanis88

hatimanis88