আস-সালাম (শান্তি ও নিরাপত্তার উৎস, ত্রাণকর্তা), আল-কুদ্দূস (পূত:পবিত্র, নিখুঁত), আস-সালাম (দোষমুক্ত)
আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো আল-কুদ্দূস (পূত:পবিত্র, নিখুঁত), আস-সালাম (ত্রুটিমুক্ত) অর্থাৎ সর্ব প্রকারের কমতি, দোষ-ত্রুটি ও সৃষ্টিকুলের সাদৃশ্য থেকে তিনি মহান, পুত:পবিত্র। তিনি যাবতীয় দোষমুক্ত, তাঁর পূর্ণতার সমকক্ষ হওয়ার সাদৃশ্য হওয়া থেকে তিনি পবিত্র।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
لَيْسَ كَمِثْلِهِۦ شَىْءٌۭ
“তাঁর মতো কিছুই নেই।”
[সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন,
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ
“আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই।”
[সূরা আল-ইখলাস, আয়াত: ৪]
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
هَلْ تَعْلَمُ لَهُۥ سَمِيًّۭا
“তুমি কি তাঁর সমতুল্য কাউকে জান?”
[সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৬৫]
فَلَا تَجْعَلُوا۟ لِلَّهِ أَندَادًۭا
“সুতরাং তোমরা আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না।”
[সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২]
অত:এব, কুদ্দূস সালামের মতোই, উভয় নামই সর্বদিক থেকে আল্লাহকে দোষ-ত্রুটিমুক্ত করে এবং সর্ব দিক থেকে সর্বময় পরিপূর্ণতা শামিল করে। কেননা যখন ত্রুটিমুক্ত হয় তখন তাতে পরিপূর্ণ পূর্ণতা সাব্যস্ত হয়।[১]
তিনি মহাপবিত্র, মহান, সমস্ত দোষ-ত্রুটি মুক্ত, সৃষ্টির কারো সাথে সাদৃশ্য হওয়া থেকে মুক্ত, দোষ-ত্রুটি ও পূর্ণতার পরিপন্থী যাবতীয় অপূর্ণতা থেকে তিনি মুক্ত। এ মূলনীতি তাঁকে পবিত্র রাখে এবং সর্বদিক বিবেচনায় যত প্রকারের অপূর্ণতা ও ত্রুটি রয়েছে তা থেকে তিনি মুক্ত। তাঁর মতো বা সাদৃশ বা অনুরূপ বা সমকক্ষ বা সমতুল্য বা অংশীদার বা প্রতিপক্ষ ইত্যাদি থেকে তিনি মুক্ত, পুত:পবিত্র। যা কিছু তাঁর মহান ও প্রশস্ত গুণাবলীর কোন একটি গুণকে অপূর্ণ করে বা ত্রুটিযুক্ত করে তা থেকে তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত, পুত:পবিত্র।
তাঁকে পূর্ণ পুত:পবিত্র ও দোষ-ত্রুটি মুক্ত রাখার আরেকটি উপায় হলো তাঁর জন্য বড়ত্ব, অহংকার ও মহত্বের গুণ সাব্যস্ত করা। কেননা আল্লাহকে দোষ-ত্রুটি মুক্ত রাখার উদ্দেশ্য হলো যাবতীয় খারাপ ধারণা থেকে যেমনটি ধারণা করা হতো জাহেলী যুগে- তাঁকে মুক্ত রাখা। যেমন, বান্দা আল্লাহর গুণ সাব্যস্ত করে বলে, সুবহানাল্লাহ (আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি) অথবা, আল্লাহর পুত:পবিত্রতা বর্ণনা করছি অথবা আল্লাহ মহান ইত্যাদি বলে তখন এসব গুণাবলী তাঁকে যাবতীয় দোষ-ত্রুটি মুক্ত করে সব ধরণের পূর্ণতা সাব্যস্ত করে।[২]
রেফারেন্সঃ
[১] আত-তাফসীর, ৫/৬২৩।
[২] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৮১-৮২; তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১২৭।