পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্ট বা পর্ন আধুনিক পৃথিবীর অন্যতম একটি বিপর্যয় যা শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষকে ভয়াল এক থাবায় গ্রাস করে রেখেছে। নারী অধিকারের নামে পণ্যের মতো নারীদেহের বেচাকেনা চলছে। ওপেন কালচার, আইটেম সং, রিয়েলিটি শো, খেলার মাঠ, বিলবোর্ড সবকিছুই, সব সময় তরুণদের যৌন আকাঙ্ক্ষার অপব্যবহারে উসকে দিচ্ছে। পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতার কারণে এসব জায়গায় পা বাড়ানো দুটো ক্লিকের ব্যাপার মাত্র।
অথচ আল্লাহ তাআলা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল প্রকার অশ্লীলতাকে হারাম করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“বল, ‘আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর উপরে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না’।” [1]
পরপুরুষ বা পরনারীর দিকে কামনা-বাসনা সহকারে তাকানো কবিরা গুনাহ। চাই তা সরাসরি হোক, বা ছবি বা ভিডিও এর মাধ্যমে হোক। অশ্লীল কন্টেন্ট দেখার ফলে চোখের গুনাহ হয় যার ব্যপারে অবশ্যই আমরা জিজ্ঞাসিত হব। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“আর সে বিষয়ের পেছনে ছুটো না, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই। কান, চোখ আর অন্তর- এগুলোর সকল বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” [2]
কিয়ামতের দিন আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। যেমন: আল্লাহ বলেন,
“আজ আমি তাদের মুখে সীল মোহর লাগিয়ে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে, আর তারা যা করত সে সম্পর্কে তাদের পাগুলো সাক্ষ্য দেবে।” [3]
পর্ন আসক্তির বিভিন্ন ধাপ আছে। অপবিত্র আত্মার পক্ষেই সম্ভব অপবিত্র কন্টেন্ট উপভোগ করা। এটা ধাপে ধাপে ঘটে থাকে অর্থাৎ আমাদের বিবেক নিস্তেজ হতে এবং অন্তর মারা যেতে কয়েকটি প্রাথমিক ধাপ বা গুনাহ অতিক্রম করে, তারপর আসক্তির জন্ম হয়। এসবক্ষেত্রে প্রায়শই নজর হেফাজত না করা, ছোট ছোট গুনাহতে অভ্যস্ত হয়ে পরা, দ্বীন চর্চার ক্ষেত্রে উদাস থাকা, কুরআন থেকে দূরে থাকা, ওপেন কালচার বা এমন কাছাকাছি ফিতনার যায়গাসমূহে যাতায়ত করা, একান্ত নীরবে বেশি সময় কাটানো ইত্যাদির প্রাথমিক ভুমিকা থাকে। তারপর একসময় গুনাহ কে গুনাহ মনে হয়না, মৃত্যুর কথা মনে আসে না, বিচারদিবস কে মিথ্যা মনে হয়, ফলে লজ্জার কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না।
ধরেন আপনি পর্নোগ্রাফি দেখবেন না বলে মনস্থির করলে কিন্তু বেশিদিন সে অবস্থায় থাকতে পারলেন না। এর কারণ বিভিন্ন সময়ে নেয়া ছোট ছোট পদক্ষেপগুলা যা আপনাকে আবার এই চক্রে ফিরিয়ে নিয়ে আসে কিছু দিনের মধ্যেই। মনে রাখুন মহান আল্লাহ তায়ালার এই সতর্কবাণীর কথাঃ
হে মুমিনগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্কসমূহ অনুসরণ করো না। আর যে শয়তানের পদাঙ্কসমূহ অনুসরণ করবে, নিশ্চয় সে অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেবে।[4]
আমরা আসক্তি থেকে মুক্তি চাই ঠিকই কিন্তু যথাযথভাবে মুক্তির পথ অনুসরণ করি না। নিচে এই আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে কিছু কার্যকরী ধাপ নিয়ে আলোচনা করা হলঃ
একনজরে...
আল্লাহর কাছে তওবা
প্রথমত, আল্লাহ তা’আলার কাছে খাঁটি তওবা করুন এবং এ ধরনের জঘন্য গুনাহ থেকে পরিত্রাণ চান। যেসব গুনাহ করেছেন তার জন্য অনুতপ্ত হোন এবং ভবিষ্যতে আর কখনো গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, নবী ও তার সাথে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না। তাদের আলো তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (সূরা তাহরীম: ৮)
‘হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ [5]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারী এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন।’ [6]
নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় ও অন্যান্য নফল ইবাদত
নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে তিলাওয়াত কর এবং সালাত কায়েম কর। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর। [7]
অন্যান্য সুন্নাত/নফল ইবাদত নিয়মিত পালন করুন। আল্লাহর কাছে দোয়া কবুলের বিশেষ সময়গুলোতে (প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর, আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে, শুক্রবার আসরের ওয়াক্তের শেষ সময়ে, বৃষ্টির সময় এর নিচে থাকা অবস্থায় ইত্যাদি সময়ে) চোখের পানি ফেলে এই গর্হিত কাজ থেকে মুক্তি চান।
হারাম রিলেশনশীপ ত্যাগ করা
এখনকার তরুণ-তরুণীদের দ্বীনে ফেরার পথে সবচেয়ে বড় যে প্রতিবন্ধকতা, সেটা হলো হারাম সম্পর্ক। এসব রিলেশনশিপ মূলত শয়তানের ফাঁদ। এই ফাঁদে পড়ে নারী-পুরুষ উভয়ে জেনার দিকে ধাবিত হয়– যার পরিনতি খুবই ভয়াবহ। পবিত্র কুরআনে পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন-
মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। [8]
মহান আল্লাহ আমাদেরকে জেনার নিকটবর্তী হতেও নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
আর যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ। (সুরা ইসরা: ৩২)
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি তার দু’চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দু’রানের মাঝখানের বস্তু (লজ্জাস্থান) এর জামানত আমাকে দিবে, আমি তার জান্নাতের যিম্মাদার। (সহীহ বুখারী ৬৪৭৪)
তাই একমাত্র আল্লাহর জন্য এই হারাম সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন।
বিয়ে করা / সাওম পালন করা
যে যুবক ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা করে অথচ ভরণ-পোষণ বহন করার সামর্থ্য না থাকার ফলে বিবাহ করতে পারে না, সে যুবকের জন্য রোযা রাখা উত্তম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। সওম তার প্রবৃত্তিকে দমন করে। [9]
স্মার্ট ফোন ব্যবহার বাদ দেওয়া এবং এর বিকল্প
১. স্মার্টফোনের পরিবর্তে বাটন ফোন: স্মার্টফোনের ব্যবহার বাদ দিন, এর পরিবর্তে বাটন ফোন ব্যবহার শুরু করুন। KaiOS অপারেটিং সিস্টেম চালিত বাটন ফোনগুলিতে ফেসবুক, ইউটিউব এবং হোয়াটসঅ্যাপ এর মত অ্যাপ থাকে, যার মাধ্যমে বেসিক কাজগুলো করতে পারবেন।
২. ফেসবুক থেকে সম্পূর্ণ বিরতি: ফেসবুক ব্যবহার একেবারেই বাদ দিন, কারণ ফেসবুক এ ২ টা ভালো জিনিস দেখলে সাথে ১ টা খারাপ জিনিস দেখবেন। এই খারাপ জিনিসগুলোই আপনাকে ট্রিগার করবে পর্নে ও তারপর মাস্টারবেশন।
৩. স্মার্টফোন ব্যবহারে রুটিন: যদি আপনার কাজের জন্য স্মার্টফোন অপরিহার্য হয়, তবে এর ব্যবহারের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী তৈরি করুন এবং সে অনুযায়ী এটি ব্যবহার করুন।
৪. বিকল্প ডিভাইস ব্যবহার: যদি আপনার ল্যাপটপ, ডেস্কটপ বা ট্যাব থাকে, তবে প্রয়োজনীয় কাজ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো সেখান থেকে ব্যবহার করুন (রুটিন মাফিক)।
৫. মোবাইল ফোনে সোশ্যাল মিডিয়া পরিহার: স্মার্টফোনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার চেষ্টা করুন।
ফেসবুক ও ইউটিউবসহ অনলাইনকে ফিতনা মুক্ত করা
যদিও এই জিনিসটি করা কঠিন, তবে আমাদের চেষ্টা লাগবে সর্বোচ্চ। আমরা জানি, ফেসবুক, ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়াগুলো বিভিন্ন সফটওয়্যার এর বিশেষ আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এলগরিদম ব্যবহার করে থাকে। যেন আপনার পছন্দের জিনিসগুলো আপনার কাছে বেশি দেখায়। অর্থাৎ আপনি যেমন জিনিস দেখবেন, এই সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আপনার সামনে সে ধরনের জিনিস দেখাবে।
তাই আপনার প্রথম কাজ হবে, আপনি যেসব পেইজ বা চ্যানেল ফলো দিয়েছেন, সেগুলো সব আনফলো/আনলাইক করা। ফেসবুকের, ইউটিউব একাউন্ট এর আপনার ফলো/সাবস্ক্রাইব করা সকল পেইজ আনফলো করুন। এর পরিবর্তে, ইসলামিক বিভিন্ন পেইজ/স্কলারদের ফলো/লাইক করুন।
ফ্রেন্ডলিস্টে সকল নন-মাহরাম মেয়ে বন্ধুদের আনফ্রেন্ড করুন। ছেলে বন্ধুদের আনফলো করে রাখুন। ছেলে বন্ধুদের কেন আনফলো/আনফ্রেন্ড করবেন এই প্রশ্নটি আপনার মাথায় আসতে পারে। উত্তর দিচ্ছি: মেয়ে বন্ধুদের আনফ্রেন্ড করলেও, এমন অনেক ছেলে বন্ধু আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকবে, যারা মেয়েদের নিয়ে ছবি দিবে বা ওইধরনের পোস্ট শেয়ার বা লাইক/কমেন্ট করবে। যা কিনা আপনার টাইমলাইনে শো করবে (এই জন্যই আনফলো করবেন)।
আপনার ব্যবহৃত সকল ডিভাইসে পর্নোগ্রাফিক সাইটগুলো বন্ধ করুন। কিভাবে সেটি করবেন, তা জানতে এই পোস্টটি পড়ুন: সকল ডিভাইসে পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্ট ও ওয়েবসাইট ব্লক করার উপায় (ছবিসহ বিস্তারিত)
দ্বীনি কমিউনিটি গড়ে তুলুন
দ্বীনি কমিউনিটি গড়ে তুলুন। অনলাইন কেন্দ্রিক না অবশ্যই, অফলাইন কেন্দ্রিক করুন। দ্বীনি ছেলে বন্ধুর সাথে সম্পর্ক রাখুন। অথবা, পরিবারের কাছের মানুষদের সাথে বিভিন্ন টপিকে দ্বীনি আলাপ করুন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
হে মুমিনগণ,তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। [10]
আল্লাহ আরও বলেন,
মুমিনরা যেন মুমিনদের ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধু না বানায়। আর যে কেউ এরূপ করবে, আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যদি তাদের পক্ষ থেকে তোমাদের কোন ভয়ের আশঙ্কা থাকে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিজের ব্যাপারে সতর্ক করছেন এবং আল্লাহর নিকটই প্রত্যাবর্তন। [11]
বই পড়ার অভ্যাস
আগে ফোনের সাথে যে সময় ব্যয় করতেন, এখন সেই সময়টুকু বই পড়ার জন্য বরাদ্দ করুন। প্রথম প্রথম হয়তো খুব কষ্ট হবে, কিন্তু নিজের মনের সাথে লড়াই করুন। ভাবুন যে, এটা আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করছেন। কেননা, আল্লাহ তা’আলা বলেন,
পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। [12]
পরামর্শ:
- আপনার দিন শুরু করুন কুরআন দিয়ে: প্রতিদিন সকালে অল্প সময় হলেও কুরআন তিলাওয়াত করুন। সময় নিয়ে মনোযোগ সহকারে, ধীরে ধীরে কুরআনের অর্থ বোঝার চেষ্টা করে পড়ুন। তাফসীর বা অনুবাদের সাহায্যও নিতে পারেন।
- শুরুটা ছোট করে শুরু করুন: প্রথম থেকেই অনেক বেশি সময় বই পড়ার চেষ্টা করবেন না। প্রতিদিন অল্প করে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে সময় বাড়ান।
- নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন: প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় বই পড়ার জন্য বরাদ্দ রাখুন এবং সেই সময়টুকু অন্য কোনো কাজে ব্যয় করবেন না।
- পরিবেশ ঠিক রাখুন: শান্ত এবং আরামদায়ক পরিবেশে বসে বই পড়ুন। এতে করে আপনি বই পড়ায় মনোযোগ দিতে পারবেন।
- প্রতি মাসে একটি ইসলামিক বই কিনুন: প্রতি মাসে বই কেনার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করুন। সঞ্চিত অর্থ দিয়ে প্রতি মাসে অন্তত একটি ইসলামিক বই কিনতে পারেন।
পর্নোগ্রাফি ও হারাম রিলেশনশীপ এর বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে পিডিএফ বই সমূহ:
- মুক্ত বাতাসের খোঁজে – লস্ট মডেস্টি
- আকাশের ওপারে আকাশ – লস্ট মডেস্টি
- আসক্তি থেকে মুক্তি সম্ভব – মো. সাদেক হোসেন মিনহাজ
- নফসের বিরুদ্ধে লড়াই – মাহমুদ বিন নূর
- পর্ণগ্রাফি নীরব ঘাতক – ওয়ায়েল ইব্রাহীম
সর্বাবস্থায় তাকওয়া অবলম্বন করা
একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় গুণ হলো সে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করে, তার কাছে ক্ষমা চায় এবং ধৈর্য ধারণ করে। যারা সব সময় আল্লাহকে ভয় করে চলে তারাই মূলত আল্লাহপাকের প্রিয় বান্দা হবার সৌভাগ্য লাভ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
সৎকর্ম ব্যতীত অন্য কিছু আয়ুস্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ব্যতীত অন্য কিছুতে তাকদীর রদ হয় না। মানুষ তার পাপকাজের দরুন তার প্রাপ্য রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়। [13]
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন। [14]
মনে রাখবেন, কিরামান-কাতেবীন (কিংবা কেরামান কাতেবিন) হলেন দুইজন ফেরেশতা, যারা প্রতিটি মানুষের কাঁধে আছেন এবং তার সবকিছু লিখে রাখেন। ডান কাঁধের ফেরেশতা সকল ভালো কাজ লিখে রাখেন, আর বাম কাঁধের ফেরেশতা সকল খারাপ কাজ লিখে রাখেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন
যখন ডানে ও বামে বসা দু’জন লিপিবদ্ধকারী পরস্পর গ্রহণ করবে। [15]
হাল ছাড়বেন না কখনোই, লেগে থাকুন ধৈর্য আর আল্লাহ’র (সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা) উপর ভরসা করে। ইনশা আল্লাহ আপনি বিজয়ী হবেনই।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
বলে দাও, হে আমার বান্দারা যারা নিজের নফসের উপর জুলুম করেছো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। [16]
জাজাকাল্লাহ খাইরান
জাযাকাল্লাহ খাইরান
★★ আমি বিগত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করতেছি এগুলো থেকে বের হওয়ার জন্য এবং আমি এগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করি কিন্তু তারপর আবার আসক্ত হয়ে পড়ি, মোট কথা আমি এটা থেকে বের হতে চাই কিন্তু বেরোতে পারিনা, আবারো এগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি, এভাবেই আমার দিন কাটতেছে আল্লাহর কাছে তওবা করি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি সবকিছু ঠিকঠাক রাখার চেষ্টা করি কিন্তু আবারো এগুলো তে আসক্ত হয়ে পড়ি কোনভাবেই এগুলো থেকে পরিত্রাণ পাইতেছি না। আমি সবসময় চাইতাম এগুলো থেকে বিরত থাকতে। একদিন আমি chrome ব্রাউজারে এসে লিখলাম কিভাবে এগুলো থেকে বিরত থাকা যায়, তারপর এই ওয়েবসাইটটি আমার সামনে আসে, এরপর এই ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যগুলো পড়ে আমার কাছে ভালো লাগে এবং এখানে দেওয়া দিক নির্দেশনাগুলো ফলো করে সবকিছু ঠিক করার চেষ্টা করতেছি। আশা করি এই খারাপ কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে পারবো, আল্লাহ আমার সহায় হোক আমিন
★★(মেইন কথা আমি সব সময় চেষ্টা করি এটা থেকে বিরত থাকার জন্য এর ফলে কয়েকদিন বিরত থাকি, কিন্তু আবারো এতে আসক্ত হয়ে পড়ি, এভাবেই আমার দিন কাটতেছে। আমি সবসময় আল্লাহর কাছে চাই আল্লাহ যেন আমাকে এই খারাপ পাপ কাজ থেকে দূরে রাখে।)
আল্লাহ আপনাকে সঠিক পথে চলার এবং এই গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করার তৌফিক দান করুন।